স্টাফ রিপোর্টার।।
সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে সন্তুষ্ট করতে পারলে এবং গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে অন্তর্বতী সরকারের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ।
বুধবার (০১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মুরাদনগর উপজেলার ডিআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শোকরানা ও দোয়া মাহফিলে এমন মন্তব্য করেন তিনি। মিথ্যা মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপিসহ অন্যান্য মজলুম দলের নেতাকর্মীদের দ্রুত মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন নিরপরাধীদের মুক্তি দেয়াটাও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটা ভাল কাজ হবে। কেউ কেউ এখনও ফ্যাসিবাদ সরকারের মতো আচরণ করছে! নিজের পছন্দ মতো ইউএনও, ওসি, এসপি আনেন।
ইউএনও এবং ওসিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জালিম সরকার বিদায় নিয়েছে তবে এখনও কেন অনেক ইউএনও, ওসি কথা বলতে ভয় পান। আপনারা কেন ভয় পান, আপনাদের সমস্যা কোথায় প্রকাশ করুন। আপনাদের অফিসে যারা যাবে হাসি মুখে তাদের গ্রহণ করবেন এবং কথা বলবেন। জনগণের লক্ষ্যের ওপরে চিন্তা করে প্রশাসনকে চলতে হবে। যদি এমনটা না করেন তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন হবে। তিনি বলেন জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রেখেছে। তাই আগামীতে সবাই মিলে সুন্দর দেশ গঠন করতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মুরাদনগরে কোনো ধরনের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।
কায়কোবাদ দীর্ঘ ১৩ বছর পর নিজ নির্বাচনী এলাকা মুরাদনগরে প্রত্যাবর্তন করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় কায়কোবাদকে বহনকারী গাড়ি বহরটি মুরাদনগর উপজেলা সদরে প্রবেশ করলে তাকে একনজর দেখতে জনতার ঢল নামে। অনেকে তাকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় কায়কোবাদ উপস্থিত জনতাকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান।
রাত সাড়ে ৮টায় শোকরানা ও দোয়া মাহফিল শেষে মুরাদনগর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মা-বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কামল উদ্দিন ভূঁইয়া ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমেদ বাদশার যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কায়কোবাদের ছোট ভাই কেএম মুজিবুল হক, কাজী জুন্নুন বসরী, কাজী শাহ আরেফিন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক আক্তারুজ্জামান, যুগ্ম-আহ্বায় সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ তৌফিক মীর, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী প্রচার সম্পাদক মাওলানা গাজী এয়াকুব ওসমানী, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি চৌধুরী রকিবুল হক শিপন, মুরাদনগর উপজেলা হেফাজতে ইসলামের আমির মুফতি আমজাদ হোসাইন, নায়েবে আমীর হাফেজ আমিনুল ইসলাম, সদস্য সচিব মোল্লা মুজিবুল হক, যুগ্ম-আহবায়ক মোস্তাক আহাম্মেদ, নজরুল ইসলাম, আজিজ মোল্লা ও আমজাদ আলী তছু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তেরো বছর দেশের বাইরে ছিলেন কায়কোবাদ। ৫ আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সম্প্রতি তিনি উক্ত মামলায় খালাস পান। গত ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মাটিতে অবতরণ করেন। ঢাকার বাসা থেকে বুধবার কুমিল্লার মুরাদনগরে আসেন।
প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখতে শীতের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তীর্থ কাকের ন্যায় অপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ জনতা। নারী পুরুষ হিন্দু মুসলিম আলেম ওলামাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে মুরাদনগর জনসমুদ্রে রুপ নেয়।