‘আগষ্ট বিপ্লব অনিবার্য ছিল’ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মতবিনিময় সভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার
ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে দেশের জনগণ সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে শেখ হাসিনার সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে। এই ফ্যাসিবাদী সরকার দেশে গুম খুন হত্যা, নির্যাতন এবং মানুষের অধিকার হরণ করে ক্ষমতার সিংহাসনকে দীর্ঘায়িত করেছিল।
হেফাজতের কর্মসূচিতে বাতি নিভিয়ে রাতের আধারে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিল। দেশের মেধাবী মানুষদেরকে তারা গুম করে আয়নাঘরে বন্দী রেখেছিল। ট্রাইবুনালের মাধ্যমে জুডিশিয়াল কিলিং করেছে। মানুষ তার মৌলিক অধিকার হারিয়েছিল। বিচার ব্যবস্থা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দেশের সংস্কৃতিকেও তারা ধ্বংস করেছে।

ছাত্ররা যখন আন্দোলন শুরু করে কোটা বাতিলের দাবিতে তখন তোদের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়েছে, মেরে খুন করে পুলিশের গাড়ির উপর থেকে টেনে হিচড়ে ফেলে দিয়েছে। এদেশের মানুষ তাদের কাছে কখনোই নিরাপদ ছিল না। স্বজন হারানো মানুষের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল। হাসপাতালগুলোতে আহত আর নিহতদের রোনাজারীতে বিবেকবান প্রতিটি মানুষের হৃদয় কেঁপে উঠেছিল। গণমাধ্যমের কন্ঠ রোধ করে দেয়া হয়েছে। কোথাও মানুষ স্বস্তিতে কথা বলার সুযোগ পায়নি, প্রতিবাদ করলেই দমন পীড়ণ চলতো। মানুষের অধিকার হরণ করতে বিগত শেখ হাসিনার সরকার ছিল শ্রেষ্ঠ। তাই ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লব অনিবার্য ছিল।

বক্তারা আরো বলেন, বিপ্লবকে ধরে রাখতে গোটা জাতির মধ্যে ঐক্য স্থাপন করতে হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের মানুষ একটি সফল অভুত্থান ঘটিয়েছিল যে সকল দাবিতে তার বাস্তবায়ন করতে হবে। খুনি লুটেরা দুর্বৃত্ত নতুন করে যেন ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। জুলাই আন্দোলনের শহীদ এবং আহতদের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ রাখতে হবে।

শনিবার কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলিট প্যালেস কনফারেন্স হলে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কুমিল্লা মহানগর শাখা। সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক এ এইচ এম তারিকুল ইসলাম লিটনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, বিশিষ্ট ইসলামিক আলোচক, নাগাইস দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোস্তাক ফয়েজী, কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট এয়াকুব আলী চৌধুরী, কুমিল্লা সেন্ট্রাল উপাধ্যক্ষ ডা. ফজলুল হক লিটন, কুমিল্লা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লার সমন্বয়ক আবু রায়হান, ছাত্র প্রতিনিধি ইব্রাহিম খালেদ, বাকশিস কুমিল্লা জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ এমদাদুল হক পলাশ, গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী আসাদুর রহমান, যমুনা টেলিভিশন কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম চৌধুরী খোকন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কুমিল্লার সভাপতি কাজী নজির আহমেদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলজার হোসেন সিনিয়র সহ-সভাপতি আশিক আহমেদ শাহীন সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মনির হোসেন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার জামিল, অর্থ সম্পাদক মোঃ আবুল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলমগীর হোসেন, বিষয়ক সম্পাদক সাইফুদ্দিন প্রমূখ।