কুমিল্লায় ১০টাকা কেজির চাল বিক্রি, না পেয়ে ফিরে গেছেন অনেকে

তৈয়বুর রহমান সোহেল।।
দুপুর একটা। কুমিল্লার তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই। অশোকতলা বিসিক গেটে প্রায় ৪শ’ নারী-পুরুষের সারি। কারো পরনে পুরনো শাড়ি, ছেঁড়া গেঞ্জি, ময়লাযুক্ত প্যান্ট আর লুঙি। তাপ থেকে বাঁচতে কারো মাথায় বস্তা। মঙ্গলবার কুমিল্লা নগরীর অশোকতলায় খাদ্য অধিদপ্তরের বিশেষ ও ওএমএস’র দশ টাকা কেজির চাল বিক্রির সময় দেখা যায় এমন দৃশ্য।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, চাল কেনার জন্য সকাল সাতটা থেকে লাইনে দাঁড়াতে থাকে অশোকতলার কম ভাগ্যবান মানুষেরা। দশটা থেকে শুরু হয় চাল বিক্রি। এসময় মানুষের ভিড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ, খাদ্য অধিদপ্তর ও ডিলারের লোকজনকে পরিস্থিতি সামাল দিতে বারবার হিমশিম খেতে হয়।
খাদ্য অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চল সূত্রে জানা যায়, এ এলাকার চারশ জন ব্যক্তির কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে পাঁচ কেজি করে চাল বিক্রি করা হয়। মঙ্গলবার নির্ধারিত দুইটন চাল বিক্রি হয়। ৩টা পর্যন্ত চাল বিক্রির কথা থাকলেও দুপুর দেড়টার দিকে চাল শেষ হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘক্ষণ সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত তিনশ জনকে চাল না কিনে হতাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে হয়। চাহিদা অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করতে পারায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে স্থানীয় লোকজন জানান।
অশোকতলায় দায়িত্বে থাকা খাদ্য অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের সহকারী উপ-পরিদর্শক অঞ্জন কুমার সাহা জানান, অশোকতলাসহ কুমিল্লার বিভিন্ন পয়েন্টে খাদ্য অধিদপ্তর ও ওএমএস কর্তৃক দশ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। চাল পর্যাপ্ত মজুদ আছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বাড়ানো হবে।

এদিকে একই দৃশ্য দেখা গেছে কুমিল্লা নগরীর বিষ্ণপুর চৌমুহনী এলাকায়। সেখানে অনেকে রোদে দাঁড়াতে না পেরে তার স্থানে রাস্তায় বস্তা দিয়ে সিরিয়াল ঠিক রেখেছেন। তবে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে চাল না পেয়ে ফিরে গেছেন অনেকে। এখানে আইন শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ সদস্যদের বসিয়ে রাখা হয়েছে।
শরীফা বেগম নামের একজন বলেন,কম দামের চালের আশায় লাইনে দাঁড়িয়েছি। আরেকদিন নিয়েছি। চালে দুর্গন্ধ। তবে গরিবের সুগন্ধ আর দুর্গন্ধ কি। কিছু পেটে দিতে পারলেই হলো। এই চাল দুই দিন পর পর দিলে আমাদের উপকার হতো।
ডিলার আবুল কালাম আজাদ বলেন,আমি ৪০ বস্তা চাল পেয়েছি। তা ১০টাকা ধরে বিক্রি করছি। যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ বিক্রি করবো।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা এস এম কায়ছার আলী বলেন,নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭জন ডিলার চাল বিক্রি করছেন। প্রতি ওয়ার্ডে চারশত জন পাঁচ কেজি করে চাল পাচ্ছেন। এছাড়া জেলার আটটি পৌরসভায় বিক্রি করা হচ্ছে। চাহিদা অনুসারে বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানান।