ইলিশে ভরপুর চাঁদপুরের বাজার
চাঁদপুর প্রতিনিধি।।
পদ্মা-মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলেও চাঁদপুরের মাছঘাট এখন উপকূলীয় অঞ্চলের ইলিশের দখলে। সাগর উপকূলে ধরা পড়া ইলিশে সরগরম চাঁদপুরের পাইকারি বাজার।
সাগর মোহনায় ৬৫ দিন নিষিদ্ধ থাকার পর এখন জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। আর সেই ইলিশ সরাসরি চলে আসছে চাঁদপুর মাছঘাটে।
অনেকেই মনে করছেন হয়তো মাছঘাটে আসা ইলিশগুলো চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার রূপালি ইলিশ। মূলত এসব পদ্মা-মেঘনায় আহরিত ইলিশ নয়। বরিশাল, ভোলা, সন্দ্বীপ ও হাতিয়াসহ সাগর উপকূলীয় অঞ্চলের ইলিশেই ভরা এখন চাঁদপুর ইলিশের মাছঘাট।
অথচ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন এসে স্থানীয় ইলিশ ভেবে কিনে নিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশনের পাইকারি মাছঘাটে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ পাওয়া যায়। আর এসব ইলিশ প্রতিদিন সকালে সাগর থেকে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় ট্রলারে করে চাঁদপুর ঘাটে নিয়ে আসা হয়।
নিষেধাজ্ঞার পর জেলের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। কদিন আগেই এই নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশ ধরা শুরু হয়। এরপর থেকে চাঁদপুরের মাছঘাট এসব ইলিশ বিক্রেতাদের দখলে চলে যায়।
চাঁদপুর মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিনই মাছঘাটে ট্রলার বোঝাই বিভিন্ন সাইজের ইলিশ আসছে। সড়ক পথে ট্রাক, মিনি ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে দক্ষিণাঞ্চলীয় ইলিশ নিয়ে আসছে চাঁদপুর। শ্রমিকরা ঘাটে আসা ইলিশ টুকরিতে ভরে আড়তে তোলে বড় বড় স্তুপ করে সাজিয়ে রাখছেন।
চাঁদপুর মাছঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী শাহ আলম বকাউল জানান, দেশের বিভিন্ন এলাকা মানুষ আসছে। কিন্তু এসব ইলিশ উপকূলের। পদ্মা বা মেঘনায় এসব ইলিশ তেমন ধরা পড়ছে না। তাই নদী পাড়ের জেলেরা খুবই হতাশ।
প্রতিদিন কি পরিমাণ মাছ আমদানি হয়, এর উপর দাম নির্ধারণ করা হয়। আমদানি বাড়লে দাম কমে, আবার আমদানি কমলে দামও বাড়ে।
বর্তমানে চাঁদপুর মাছঘাটে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা। চাঁদপুরের লোকাল ইলিশ এক হাজার থেকে ১১শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৫শ’ থেকে ৭শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা মণে বিক্রি করা হচ্ছে। আর চাঁদপুরের পদ্মার ইলিশ ৩৭ থেকে ৩৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত বলেন, চাঁদপুরের জেলেরা পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ অন্য মাছ আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। এখন ইলিশের ভরা মৌসুম কিন্তু পদ্মা-মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা নেই। এখানে আসা সব ইলিশ সাগর মোহনার। জেলেরা ট্রলার ও জাল নিয়ে চষে বেড়িয়েও ইলিশের দেখা মিলছে না। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে চাঁদপুরের ইলিশের আমদানি বাড়বে।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিসুর রহমান বলেন, ইলিশের মৌসুম শুরু হয়েছে। আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ইলিশ আহরণ বাড়বে। ওই সময়ের ইলিশও হবে সুস্বাদু। কারণ লকডাউন থাকার কারণে নদীর পানি দূষণ অনেকটা কম হয়েছে। ফলে ইলিশসহ অন্য প্রজাতির মাছ অনায়াসে বিচরণ করতে পেরেছে।